অনুবাদকের কথা
পৃথিবীতে সবচেয়ে মধুর শব্দটি হচ্ছে ‘মা’। জগৎ সংসারের শত দুঃখ-কষ্টের মাঝে যে মানুষটির একটু সান্ত¡না আর স্নেহ-ভালোবাসা আমাদের সব বেদনা দূর করে দেয়, তিনিই হলেন ‘মা’। মায়ের চেয়ে আপনজন পৃথিবীতে আর কেউ নেই। দুঃখে-কষ্টে, বিপদে-সংকটে যে মানুষটি স্নেহের পরশ বিছিয়ে দেন, তিনি হচ্ছেন আমাদের সবচেয়ে আপনজন- ‘মা’। প্রতিটি মানুষের পৃথিবীতে আসা এবং বেড়ে ওঠার পেছনে মা-ই প্রধান ভূমিকা পালন করেন। মায়ের তুলনা অন্য কারো সঙ্গে চলে না। মায়ের সঙ্গে সন্তানের নাড়ির সম্পর্ক, যা একটু আঘাত পেলেই প্রতিটি মানুষ ‘মা’ বলে চিৎকার করে জানান দিয়ে থাকে। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের কাছে তার ‘মা’ অতি মূল্যবান হয়ে থাকে। শুধু মানুষ কেন? পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীই তার মায়ের কাছে ঋণী। সেই ঋণ শোধ করার কোনো উপকরণ আল্লাহপাক দুনিয়ায় সৃষ্টি করেননি। ইসলাম মায়ের মর্যাদাকে মহিমান্বিত করেছে এবং এই ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা তাঁর পবিত্র গ্রন্থ কুরআনুল কারিমে বর্ণনা করেছেন:
وَٱعْبُدُواْ ٱللَّهَ وَلاَ تُشْرِكُواْ بِهِ شَيْئاً وَبِٱلْوَالِدَيْنِ إِحْسَاناً
“. . . তোমরা ইবাদত কর আল্লাহর, তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সাথে।”
وَوَصَّيْنَا ٱلإِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ وَهْناً عَلَىٰ وَهْنٍ وَفِصَالُهُ فِى عَامَيْنِ أَنِ ٱشْكُرْ لِى وَلِوَالِدَيْكَ إِلَىَّ ٱلْمَصِيرُ
“আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার ‘মা’ তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। এবং তার দুধ ছাড়ানোর বয়স দু’বছর। (আমি তাকে এ নির্দেশ দিয়েছি যে) আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। (তোমাদের সবাইকে) অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে।”
উল্লেখিত আয়াতদ্বয় থেকে এটা স্পষ্ট যে, আল্লাহ তায়ালার দৃষ্টিতে মায়ের মর্যাদা কতখানি? আর এই ‘মা’ যদি কোন নবী-রাসূল বা পবিত্র ইমামগণের মা হয়ে থাকেন তাহলে তাঁদের মর্যাদা আরো কতখানি বৃদ্ধি পাবে তা মনে হয় আর বলার অবকাশ রাখে না। বাংলা ভাষায় এটাই প্রথম গ্রন্থ যেখানে চৌদ্দজন মাসুম (আ.)-এর মায়েদের জীবনীকে একত্রিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
আমার এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় যারা আমাকে অনুপ্রেরণা এবং সহায়তা করেছেন তাদের সকলের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। সম্মানিত পাঠকবৃন্দের নিকট সনির্বন্ধ অনুরোধ রইল; এই পুস্তকে কোথাও কোন ত্রুটি-বিচ্যুতি পৃরিলক্ষিত হলে আমাকে অবহিত করবেন, তাহলে পরবর্তী সংস্করণে তা সংশোধন করার প্রয়াস পাব। – ইনশাআল্লাহ।
মাহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যেন আমাদের সকলের সৎ নিয়তকে কবুল করেন।
– এলাহী আমীন।
– শেখ আলী আকবর
সূচীপত্র
প্রথম অধ্যায়
হযরত মা আমিনা
হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর মা ১৫
দ্বিতীয় অধ্যায়
হযরত মা খাদিজা
হযরত মা ফাতিমা যাহরা (সা.আ.)-এর মা ৩৫
তৃতীয় অধ্যায়
হযরত ফাতিমা বিনতে আসাদ
ইমাম আলী (আ.)-এর মা ৫৭
চতূর্থ অধ্যায়
হযরত ফাতিমা (সা.আ.)
ইমাম হাসান ও হুসাইন (আ.)-এর মা ৭৫
পঞ্চম অধ্যায়
হযরত শহর বানু
ইমাম সাজ্জাদ (আ.)-এর মা ১০৩
ষষ্ঠ অধ্যায়
হযরত ফাতিমা
ইমাম বাকির (আ.)-এর মা ১১৩
সপ্তম অধ্যায়
হযরত উম্মে ফারওয়া
ইমাম জাফর সাদিক্ব (আ.)-এর মা ১২১
অষ্টম অধ্যায়
হযরত হামিদা
ইমাম কাযিম (আ.)-এর মা ১২৯
নবম অধ্যায়
হযরত নাজমা
ইমাম রেযা (আ.)-এর মা ১৩৯
দশম অধ্যায়
হযরত খাইযুরান
ইমাম জাওয়াদ (আ.)-এর মা ১৪৭
একাদশ অধ্যায়
হযরত সামানা
ইমাম আলী নাক্বি (আ.)-এর মাতা ১৫৩
দ্বাদশ অধ্যায়
হযরত সালিল
ইমাম হাসান আসকারী (আ.)-এর মা ১৫৭
ত্রয়োদশ অধ্যায়
হযরত নার্জিস
ইমাম মাহদী (আ.)-এর মা ১৬৩
গ্রন্থ সূত্র ১৭৭