“খেলাফত ও রাজতন্ত্র”
এক অতি আলোচিত ও বহুল পঠিত গ্রন্থ। আপনিও না পড়ে আলোচনায় যাবেন না।
খেলাফত ও রাজতন্ত্রের যে স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ধারনা সাহাবায়ে কেরাম পোষন করতেন , হযরত আবু মুসা আশআরী রা. তা ব্যক্ত করেন নিম্নোক্ত ভাষায়,
ইমারাত (অর্থাৎ খেলাফত) হচ্ছে তাই, যা প্রতিষ্ঠা করতে পরামর্শ নেয়া হয়েছে, আর তরবারীর জোরে যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তা হচ্ছে বাদশাহী বা রাজতন্ত্র। (তাবকাতে ইবনে সা’আদ, ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা -১১৩)
সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী (রহ.) এর গ্রন্থরাজির মধ্যে ‘খেলাফত ও মূলুকিয়াত’ অন্যতম একটি মৌলিক গ্রন্থ। যা একই সাথে বহুল আলোচিত এক অনবদ্য গ্রন্থও…
“বর্তমান বিশ্বে যারা খাঁটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চান তাদের কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্রের রূপরেখা এ গ্রন্থে বিদ্যমান।”
ইসলামে খেলাফতের সত্যিকারের ধারণা কী, প্রথম যুগে কোন মূলনীতির ভিত্তিতে তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, কী কী কারণে তা রাজতন্ত্রে পরিবর্তিত হয়েছে, এ পরিবর্তনে কী পরিণতি দেখা দিয়েছে ; তা যখন দেখা দেয় তখন উম্মতের প্রতিক্রিয়া কী ছিল?___ এগুলো হচ্ছে এ গ্রন্থের মূল আলোচ্য বিষয়।
প্রায় ৩৪৭ পৃষ্ঠায় ব্যপ্ত বইটিতে ৯টি অধ্যায় সন্নিবেশিত হয়েছে। অধ্যায়গুলো যথাক্রমে__কুরআনের রাজনৈতিক শিক্ষা, ইসলামের শাসননীতি, খেলাফতে রাশেদা ও তার বৈশিষ্ট্য, খেলাফতে রাশেদা থেকে রাজতন্ত্র পর্যন্ত, খেলাফত ও রাজতন্ত্রের পার্থক্য, মুসলামনদের মধ্যে ধর্মীয় মতবিরোধের সূচনা ও তার কারণ, ইমাম আজম আবু হানিফা (রহ) খেলাফত ও এতদসংক্রান্ত বিষয়ে ইমাম আবু হানিফা রহ. এর মতামত ও ইমাম আবু ইউসুফ (রহ)।
ইসলামি খিলাফাত কী কারণে ও কিভাবে রাজতন্ত্রে রূপান্তরিত হয়েছিল ও এতে করে ইসলামি খেলাফাতের যেসব নীতি পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছিল সেগুলো তিনি ধামাচাপা না দিয়ে নির্দ্বিধায় এ গ্রন্থে তুলে ধরেছেন। সে জন্য কিছু লোক তাঁর কঠোর সমালোচনাও করেছেন। এসব সমালোচনার যুক্তিগ্রাহ্য জবাব প্রায় ৫০ পৃষ্ঠা ব্যাপ্তি গ্রন্থের পরিশিষ্টে সংযোজিত করেছেন।
খোলাফায়ে রাশেদার পতন ও রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ক্রমধারা দেখাতে গিয়ে মূলত তিনি এ গ্রন্থে ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেননি; বরং এ মহা পরিবর্তনে কোন ঘটনাপ্রবাহ বিপর্যয় সৃষ্টির কারণ হয়েছিল, সে প্রশ্ন নিয়েই আলোচনা করেছেন।
স্পষ্টত, প্রাসঙ্গিক আলোচনায়, খোলাফায়ে রাশেদার তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান ( রা.) এর শাসনকালই মূল আলোচ্য বিষয়।
উক্ত গ্রন্থ পাঠের ফলে পাঠক, খোলাফায়ে রাশেদার নির্বাচন পদ্ধতি ও ৩০ বৎসরের তাঁদের কার্যধারা এবং জঙ্গে জামাল, সিফফিনের যুদ্ধ ও দুমাতুল জান্দাল সম্পর্কে ইসলামি ঐতিহাসিকদের রেফারেন্সে বিস্তারিত পাঠ নিতে পারেন। যার বিপরীতে গতানুগতিক শিক্ষাক্রমে ইউরোপীয় ইতিহাসবিদদের সমালোচনামূলক ও মনগড়া ইতিহাস পাঠে ইতিহাসের শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্তির স্বীকার হতে পারেন।
এছাড়া, উমাইয়া -আব্বাসীয় খিলাফাতের উত্থান পতন, মৌলিক গলদ ইত্যাদির স্পষ্ট রূপরেখা পাবেন। সুতরাং, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাসের শিক্ষার্থীদের জন্য এ বই অবশ্য পাঠ্য।
আধুনিক প্রকাশনী কর্তৃক ১৯৮৪ সালো প্রকাশিত সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (রহ.) কর্তৃক রচিত গ্রন্থটি অনুবাদ করেছেন__ গোলাম সোবহান সিদ্দিকী।
২০২০ সাল নাগাদ বইটির ১৬শ প্রকাশ বেরিয়েছে।
গবেষনামূলক লেখা হওয়াতে গ্রন্থটির অন্যতম আকর্ষণীয় একটি বিষয় __উল্লেখিত /আলোচিত প্রত্যেকটি বিষয়ের কুরআন – হাদিস ভিত্তিক রেফারেন্স । এবং ঐতিহাসিক নির্ভরযোগ্য লেখক ও মনীষীদের থেকে গৃহীত রেফারেন্সও রয়েছে।
যাদের ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরেছেন।
Reviews
There are no reviews yet.