পুরুষ শাসিত সমাজে মা ফাতিমা নিজের যোগ্যতাকে এভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, কোনো পুরুষের পক্ষে তাঁর যৌক্তিক আলোচনার প্রতিবাদ করা সম্ভব ছিল না। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ আমরা দেখি, রাসূল (সা.)-এর ওফাতের পর মসজিদে নববীতে বাগে ফাদাকের অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে দলিলভিত্তিক সুবিস্তৃত বক্তব্য।
তাঁর ক্ষুরধার বক্তব্যের কারণে বাকহীন হয়ে পড়েছিল মসজিদে নববীতে উপস্থিত থাকা পুরুষ নামক কাঠের পুতুলেরা। অশ্রুসিক্ত নারীদের কান্না যেন সেদিন বাঁধ ভেঙে দিয়েছিল। শিশুদের আহাজারিতে যেন মদিনার মসজিদ প্রাঙ্গণে নতুন কোনো সুরের জন্ম হয়েছিল। আনসার ও মুহাজিরদের অশ্রুধারা যেন সৃষ্টি করেছিল অপ্রতিরোধ্য ঝড়ের প্রবাহ। অবস্থা বেগতিক দেখে তৎকালীন খলিফা হযরত আবুবকর বাগে ফাদাক ফিরিয়ে দেওয়ার ওয়াদাপত্রও তৈরি করে ফেলেছিলেন। কিন্তু আযাযিলের প্রতিনিধিরা এরপরও নিজেদের অহঙ্কারের মিনার থেকে নেমে আসেনি। এটাই প্রকৃত সত্য, যাদের অন্তরে মোহর অঙ্কিত হয়ে যায় তাদের কোনো হেদায়াতের বাণীতেই চোখের পর্দা উন্মোচিত হয় না।
যাহোক, অহঙ্কারীরা ওয়াদাপত্র ছিঁড়ে ফেলেই শান্ত থাকেনি; তারা সংঘবদ্ধ হয়ে মা ফাতিমার ঘরে হামলা করেছিল এবং সেখানেও মা ফাতিমা প্রতিরোধ গড়েছিলেন। সেই নির্মম জুলুমের কথা সমাজ থেকে মুছে ফেলার অপচেষ্টায় জালিমদের প্রেতাত্মারা আজও সক্রিয়। সেদিন অসংখ্য জালিমের ভিড় থেকে দাম্ভিকতার পোশাকে আবৃত এক নিকৃষ্ট নরাধম উচ্চারণ করেছিল “এটা ফাতিমার ঘর হলেও আমরা এতে আগুন জ্বালিয়ে দেব।” সেখানে মা ফাতিমা যাহরা তাঁর গর্ভের সন্তান হযরত মহসিনের শাহাদাতের সাক্ষী হয়েছিলেন।