শানে রহমাতাল্লিল আলামিন ও সাম্প্রতিক ভাবনা
‘শানে রহমাতাল্লিল আলামিন’ মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স)-কে নিয়ে করা আমার দ্বিতীয় বই। এর আগে শিশুদের উপযোগী ছড়ার ছন্দে ‘ছন্দে ছন্দে মহানবী’ নামে একটি বই প্রকাশ করেছিলাম ২০১৩ সালে। এবারের বইটি মৌলিক বই না হলেও সাজানোর ভঙ্গিতে মৌলিকতা রয়েছে। এ বইটির বিশেষত্ব হচ্ছে বৈচিত্র্য। ধর্ম বিষয়ক জ্ঞানার্জন ও চর্চার ক্ষেত্রে একমুখিনতা আমাদের ধর্মীয় চেতনাবোধকে সংকীর্ণ ও গণ্ডিবদ্ধ করে তোলে। সেখান থেকে একটু বেরিয়ে আসার জন্যেই এহেন প্রয়াস।
অতি সম্প্রতি আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে মহানবি (স) ও তাঁর ব্যক্তিজীবন নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার জের হিসেবে মুসলিম বিশ্ব তোলপাড় হয়েছে। আমাদের দেশও তার ব্যতিক্রম নয়; এখানেও তার জোর হাওয়া লেগেছে। অনলাইন-অফলাইন সব জায়গায় এ বিষয়ক আলোচনা, নিন্দার ঝড় এবং সর্বোপরি বয়কটের মতো কথাবার্তা। বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় বয়কট কোনো সমাধান নয়; বরং এতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বিশেষত আমাদের মতো উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের জন্য তা আরও বেশি সমস্যা তৈরি করতে পারে।
অতি উৎসাহী অনেকে ফেসবুকসহ সকল অনলাইন প্লাটফর্মে সোচ্চার হলেও অনেক ক্ষেত্রেই তা লোকদেখানো কর্মকাণ্ড বলে ইতোমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে। তবে কি আমরা মুসলমানরা রাসুলুল্লাহ (স)-কে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য শুনেও চোখ-মুখ বন্ধ করে সহ্য করে যাব! মোটেও বিষয়টি তেমন নয়। বয়কট না করেও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে লড়াই করা যায়।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আগে আমাদের নিজেদের দিকে তাকানো দরকার। আমরা নিজেরাই ধর্ম বিষয়ে কতটুকু জ্ঞান রাখি এবং তার সত্য-মিথ্যা যাচাই-বাছাই করতে সচেষ্ট কি-না, সে ব্যাপারেও খোলা মনে এগিয়ে আসতে হবে। অন্য ধর্মের লোকজন আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে এমন অনেক বিষয় আমাদের ধর্মীয় বিভিন্ন রেফারেন্স গ্রন্থগুলোতেই রয়েছে। আমরা সেসব সম্পর্কে কতটুকু ওয়াকিবহাল! তাই আমাদের আগে নিজেদের ধর্ম ও রাসুলুল্লাহ (স) সম্পর্কে আরও বেশি চর্চা করা প্রয়োজন।
আমরা রাসুলুল্লাহ (স) সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ জানার চেষ্টায় ব্রতী হই এবং তাঁর জীবনাদর্শ আমাদের ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনে ফুটিয়ে তুলতে সচেষ্ট হই। সবাইকে ধন্যবাদ।