কারবালার নেপথ্যের ইতিহাস

Original price was: ৳ 990.00.Current price is: ৳ 600.00.

Title কারবালার নেপথ্যের ইতিহাস
Author
Translator
Copyright
Publisher
Edition 1st Published, 15 August 2025
ISBN 978-984-94791-6-1

সূচিপত্র

ভূমিকা /০৮
অনুবাদকের ভূমিকা /১১
অধ্যায় ০১: ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট /১৪
অধ্যায় ০২: ইসলামের প্রতিপক্ষ /২৩
অধ্যায় ০৩: রাসূল (দ.) কর্তৃক ইমাম আলী (আ.)-কে পরবর্তি ‘খলিফা’ হিসেবে মনোনয়ন প্রদান /৪২
অধ্যায় ০৪: মুসলমানদের মধ্যে প্রথম রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র /৬০
অধ্যায় ০৫: রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর প্রতি মিথ্যারোপ করা /৭২
অধ্যায় ০৬: রাসূল (দ.)-এর নির্দেশের অবমাননা /৭৬
অধ্যায় ০৭: হাদিস /৮০
অধ্যায় ০৮: জিহাদের তাৎপর্য বিকৃৃতকরণ /৯৬
অধ্যায় ০৯: যাকাত ও খুমসের বিকৃতি /১০৯
অধ্যায় ১০: খিলাফত /১১৬
অধ্যায় ১১: আপামর জনগণের পছন্দে মনোনিত একমাত্র খলিফা হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (আ.) /১৩৯
অধ্যায় ১২: ইমামত /১৫৪
অধ্যায় ১৩: মুসলিম সম্রাজ্য /১৬৫
অধ্যায় ১৪: ইয়াযিদ বিন মুয়াবিয়া বিন আবু সুফিয়ান /১৭৪
অধ্যায় ১৫: ইমাম হুসাইন (আ.)-এর মক্কায় হিজরত /১৮৪
অধ্যায় ১৬: মুসলিম বিন আক্বীল; কুফায় ইমাম হুসাইন (আ.)-এর প্রেরিত প্রতিনিধি/ ১৯২
অধ্যায় ১৭: মক্কা হতে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর যাত্রা /২০৬
অধ্যায় ১৮: কারবালার অভিমুখে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর যাত্রা/ ২১৭
অধ্যায় ১৯: কারবালায় ইয়াযিদের বাহিনীর সমাবেশ /২৩৯
অধ্যায় ২০: সপ্তম ও অষ্টম মর্হরম, ৬১ হিজরি সন /২৪৬
অধ্যায় ২১: ৯ই মহররম /২৫৪
অধ্যায় ২২: আশুরা; ১০ই মর্হরম /২৬৬
ক্বাসিম ইবনে ইমাম হাসান (আ.)-এর শাহাদাৎ /২৭৭
হযরত আব্বাস এবং ইমাম আলী (আ.)-এর অন্যান্য পুত্রদের শাহাদাৎ /২৭৮
হযরত আলী আকবার ইবনে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাহাদাৎ /২৮২
হযরত আলী আসগার ইবনে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাহাদাৎ /২৮৮
ইমাম হুসাইন ইবনে আলী (আ.)-এর শাহাদাৎ /২৯০

অধ্যায় ২৩: গর্বিত শহীদেরা /৩০১
অধ্যায় ২৪: শহীদদের পবিত্র সমাধি /৩১০
অধ্যায় ২৫: কারবালা পরবর্তী নিপীড়ন /৩১৬
অধ্যায় ২৬: বিস্ময়কর ঐশ্বরিক মু’জিযা-সমূহ /৩৪৮
অধ্যায় ২৭: পবিত্র আহলে বাইতের অনুসারীদের প্রতি নিপীড়ন /৩৬৭
প্রথম অংশ: বিভিন্ন সমাধিসৌধ ধ্বংসকরণ /৩৬৮
দ্বিতীয় অংশ: উমাইয়্যাদের দ্বারা আহলে বাইতের অনুসারীদের প্রতি নিপীড়ন ও হত্যাকান্ড /৩৭৫

[ ১১ হিজরি সাল হতে ৩০ হিজরি সাল পর্যন্ত মু’য়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান কর্তৃক পবিত্র আহলে বাইতের অনুসারীদের প্রতি নিপীড়ন ] /৩৭৭
০১. সা’দ বিন উবাদাহ্ /৩৭৭
০২. মালিক বিন নু’য়্যাইরা /৩৭৯
০৩. কিন্দা ও হাজরামাউত গোত্র /৩৮২
০৪. আবু সা’ঈদ খালিদ বিন সা’ঈদ বিন আল্-আ’স বিন উমাইয়্যা /৩৮৫
০৫. উবাই বিন কা’ব বিন ক্বাইস আল্-খাযরাজি আল্-আনসারি /৩৮৬
০৬. বিলাল বিন রাবাহ্ আল্-হাবাশী /৩৮৮
০৭. হুরমুযান /৩৯০
০৮. আবু-যার জুনদাব বিন জুনাদাহ্ গি¦ফারী /৩৯১
০৯. মিক্বদাদ বিন আমর /৩৯২
১০. সালমান আল্-ফারসি /৩৯৩
১১. জামালের (জাঙ্গে-জামালের) যুদ্ধের শহীদরা /৩৯৪
১২. ওসমান বিন হুনাইফ আল্-আনসারী /৩৯৬
১৩. নাহরাওয়ানের যুদ্ধের শহীদরা /৩৯৭
১৪. সিফফিনের যুদ্ধের শহীদরা /৩৯৭
১৫. আম্মার বিন ইয়াসির /৩৯৮
১৬. হাশিম বিন উতবা বিন আবি ওয়াক্কাস আয্-যুহরী /৩৯৯
১৭. ওয়াইস ক্বারানি /৩৯৯
১৮. হযাইফা বিন ইয়ামানের পুত্রদ্বয়: সাগওয়ান ও সা’ঈদ /৪০০
১৯. মালিক বিন হারিস আল্-আশতারী /৪০০
২০. কিনানা বিন বিশর /৪০১
২১. মুহাম্মাদ বিন আবু-বকর /৪০১
২২. আ’য়্যান বিন দ্বুবায়’আহ্ /৪০১
২৩. মুহাম্মাদ বিন আবি হুযাইফা /৪০১
২৪. মেইসাম আত্-তাম্মার /৪০২

 

 

ভূমিকা

মানবতার ইতিহাসে কারবালার যুদ্ধ একটি প্রখ্যাত হৃদয়বিদারক ঘটনা। এটি কোন সাহিত্য বা রূপকথা নয়; বরং ঐতিহাসিক সত্য, যা একাধিক ঐতিহাসিক থেকে বর্ণীত হয়েছে, যাদের অনেকেই যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত ছিল, যাদের মধ্যে ইয়াযিদের বাহিনীর নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী ‘আবু মাখনাফ’ এবং ‘হামিদ বিন মুসলিম’ ছিল প্রখ্যাত।
একাধিক দৃষ্টিকোণ থেকে কারবালার যুদ্ধ একটি অনন্য ইতিহাস। কারবালার ময়দানে ইমাম হুসাইন (আ.) জয়-পরাজয় এবং জীবন-মৃত্যুকে নতুন করে সজ্ঞায়িত করেছিলেন এবং পারস্পরিক পার্থক্য নিরূপণ করেছিলেন। তিনি এবং তাঁর সাথে থাকা ক্ষুদ্র সেই দলটি মানব প্রকৃতিকে নতুনভাবে পরিচিত করেছিলেন। তাঁরা সুমহান উদ্দেশ্যে ত্যাগ স্বীকারের অনন্য মাত্রা নির্ণয় করেছিলেন। তাদের এই অকাতরে জীবন বিলিয়ে দেয়ার ঘটনা, বিরোধী শিবিরের নিকট উদাহরণ সৃষ্টি করেছিল, যারা সেদিন মানবতার মুক্তি ও স্বাধীনতার চেতনাকে রক্ষা করার জন্য রাজতন্ত্র ও বস্তুবাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। কারবালার ময়দানে বিজয়ীরা পরাজিত হয়েছিল এবং নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ারা বিজয়ী হয়েছিল। নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়ে শহিদেরা সেদিন অমরত্ব লাভ করেছিল, আর তাঁদের হত্যা করে ইয়াযিদ ইতিহাসের পাতায় কলঙ্কিত হয়েছিল।
ইমাম হুসাইন (আ.) দেখিয়েছেন যে, যুদ্ধের ময়দানে সংখ্যা ও সরঞ্জাম মুখ্য বিষয় নয়, যা জরুরী তা হল আত্মসচেতনতা, সদগুন, উদ্দেশ্যের প্রতি অবিচলতা। ইমাম হুসাইন (আ.) দেখিয়েছেন যে, সত্য ও ন্যায়পরায়ণতা অপরাজিত এবং গুটিকয়েক ব্যক্তিকে হত্যা করে তাঁদের লক্ষ্যের মহত্ব ও সত্যতাকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া যায় না।
কারবালার ময়দানে ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর সাথীদের কাছে জীবন বিলিয়ে দেয়া ছিল একেবারেই মামুলি বিষয়। সত্যিকারের বিজয়ী সেই, যে শত্রুর সামনে বাতাসে উড়তে থাকা পতাকা নিয়ে পর্বতের ন্যায় দাঁড়িয়ে থাকে এবং শত্রু দ্বারা নিহত হওয়ার পর পতাকাও তাঁর সাথে জমিনে পড়ে থাকে।
মায়েরা বিজয়ীদের নামে তাঁদের সন্তানদের নাম রাখে এবং পরাজিতদের থেকে সন্তানদেরকে দূরে রাখার চেষ্টা করে। বিজয়ীরা ‘বীর’ হিসেবে আখ্যায়িত হয়, আর পরাজিতরা একটি জাতি, দেশ, গোত্র বা সভ্যতার নিকট শেষ পর্যন্ত ‘খলনায়ক’ হিসেবে পরিচিত হতে থাকে। পৃথিবীর ইতিহাসে এর অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে।
ইমাম হুসাইন (আ.) প্রচলিত এসকল ধারনাকে মিথ্যা প্রমাণ করেছিলেন। প্রথমবারের মতো, হয়তো শেষ বারের মতো কারবালার ময়দান প্রমাণ করেছিল যে, পরাজিতরাও তাঁদের আদর্শের কারণে বিজয়ী হতে পারে। বিজয়ী তো সে, যার মস্তকহীন, প্রাণহীন দেহ যুদ্ধক্ষেত্রে পড়ে থেকেও অমর সত্যের জন্য বিজয়ী দাবী করতে থাকে।
ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর সেই ক্ষুদ্র বাহিনী মানব বৈশিষ্ট্যকে নতুন রূপে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন। স্বভাবতই, সম্পদ ও ক্ষমতার আকর্ষণ মানুষকে হাতের কাছে যা পাওয়া যায় তাই কুড়িয়ে নিতে প্রলোভিত করে থাকে। আর যারা ক্ষমতা ও সম্পদ হারায় তারা বিরান মরুভূমি ব্যতীত আর কিছু পায় না। কারবালা এই ধারণাকে পাল্টে দিয়েছিল। ইমাম হুসাইন (আ.)-এর ক্ষুদ্র বাহিনীর কোন সাথীই সেদিন তাঁকে হতাশ করেননি, যদিও তাঁরা সকলেই জানতেন যে, দিনের শেষে তাঁদের মৃত্যু অবধারিত এবং দুনিয়াবি কোন স্বার্থই তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছে না। অন্যদিকে, নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও ইয়াযিদের সুবিশাল বাহিনীর কিছু বীরযোদ্ধা উমাইয়্যা বাহিনী ত্যাগ করে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর কাফেলাতে যোগ দিয়েছিলেন, যদিও দিনের শেষে গণিমত হিসেবে সম্পদ অর্জন ছিল তাঁদের কাছে একেবারেই সহজলভ্য।
স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটি ব্যক্তি স্বীয় জীবনের প্রতি সমাগত হুমকির মোকাবেলা করবেই, সমর্থন ও সাহায্য প্রার্থনা করে সে মানুষকে একত্রিত করতে চাইবেই। এটি আরও অধিক লক্ষ্য করা যায় যুদ্ধের সময়। যখন যুদ্ধের পরিকল্পনা করা হয়, তখন নেতা আগত হুমকির মোকাবেলা করার জন্য সাধ্যমত লোক সমাগম করে বাহিনী তৈরি করে থাকে। অথচ এই মানব প্রকৃতির সহজাত প্রবৃত্তির বিপরীতে ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর মদিনা থেকে কুফা পর্যন্ত সফরে লোকদের এই বলে তাঁর সাথে যুক্ত হওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করেছিলেন যে— “ইয়াযিদ শুধুমাত্র আমার রক্ত চায়।”
এর কারণগুলো:
প্রথমত— ইমাম হুসাইন (আ.) স্বীয় জীবনের প্রতি হুমকির সাথে সমঝোতা করে নিয়েছিলেন এবং লোকদেরকে তাঁর সাথে যুক্ত হয়ে বাহিনী তৈরিতে অনুৎসাহিত করেছিলেন;
দ্বিতীয়ত— যুদ্ধে জড়ানোর উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না;
তৃতীয়ত— তিনি রক্তপাত এড়িয়ে যেতে চাইছিলেন বা কমপক্ষে জীবননাশের পরিমাণ কমাতে চেয়েছিলেন;
সবশেষে— নারী, শিশু, নিকটাত্মীয়, সামান্য সংখ্যক সাহাবীকে সাথে নিয়ে ইমাম হুসাইন (আ.) দেখাতে চেয়েছিলেন যে, দলের শক্তি কম হওয়া স্বত্বেও নিষ্ঠুর, জঘন্য, জালিম ও শয়তানি চিন্তার ধারক ইয়াযিদের ক্ষমতা, তার সৈন্যদের কৃত মারাত্মক হত্যাকাণ্ড ও বিনা উস্কানিতে সৃষ্টি করা নৃশংসতা তাঁদের অন্তরে কোন ভীতির সৃষ্টি করতে পারেনি।
ইমাম হুসাইন (আ.) প্রমাণ করেছেন যে, সত্য ও ন্যাপরায়নতা সবসময়ই বিজয়ীদের ভিড়ে হারিয়ে যায় না। তিনি দেখিয়েছেন যে, সংখ্যার আধিক্য মৌলিক নয়, মৌলিক হল সক্ষম ব্যক্তিদের সত্য, ন্যায়, স্বাধীনতা ও আদর্শের জন্য বাতিলের বিরুদ্ধে আমরণ প্রতিরোধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “কারবালার নেপথ্যের ইতিহাস”

Your email address will not be published. Required fields are marked *