ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান [এহসানের প্রতিদানে এহসান ছাড়া আর কী হতে পারে? (৫৫:৬০)]

Original price was: ৳ 140.00.Current price is: ৳ 84.00.

Title ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান
Author
Editor
Publisher
ISBN 978-984-35-0146-2
Edition দ্বিতীয় প্রকাশ ২১শে বইমেলা ২০২১
Number of Pages 96

সূচী
* ভূমিকা
* হযরত আবু তালিবের পরিচয়
* আব্দুল মোতালিবের দৃষ্টিতে হযরত আবু তালিব
* পবিত্র কাবার দায়িত্ব গ্রহণ ও আরবে হযরত আবু তালিবের প্রভাব
* ব্যবসায়ী আবু তালিব ও কিশোর নবী মোহাম্মদ (সা.)
* হযরত আবু তালিবের নিকট কাফের সর্দারদের অভিযোগ
* মোহাম্মদ (সা.) আবু তালিবের ইয়াতিম
* ইসলাম প্রচারের পূর্বে মোহাম্মদ (সা.)
* নবী মোহাম্মদ (সা.)-এর বিবাহ পড়ান হযরত আবু তালিব
* আধ্যাত্মিক সাধনায় মোহাম্মদ (সা.)
* শেবে আবু তালিব-এ আশ্রয়
* অসুস্থ চাচার পাশে মোহাম্মদ (সা.)
* হযরত আবু তালিবের ম্যাইয়াতের গোসল ও জানাযার নামাজ পড়ান মহানবী (সা.)
* শাজারায় আবু তালিবই শাজারায়ে মোহাম্মদ (সা.)
* হযরত আবু তালিব-এর নামে বিভ্রান্তি প্রচারের কারণসমূহ
* হাদীসে দ্বাহদ্বাহ’র পর্যালোচনা
* প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা
* মুসলমানদের দায়িত্ব-কর্তব্য ও আদেশ-নিষেধ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের কিছু আয়াত
* হাদীসে রাসূল (সা.)
* ‘জ্ঞান নগরীর দরজা’ হযরত আলীর কিছু বিখ্যাত উক্তি

ভূমিকা
মহান সৃষ্টিকর্তার নামেই শুরু করছি, পবিত্র কোরআনের মাধ্যমেই জানতে পেরেছি আল্লাহ পাকের মনোনীত দ্বীন হলো ‘ইসলাম’ । এই ইসলামকে যিনি সমগ্র বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন তিনি হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব নবী-রাসূলগণের সর্দার হযরত মোহাম্মদ (সা.)। যে নবী (সা.)-এর আগমন না হলে আমরা মহান আল্লাহ সম্পর্কে কিছুই জানতে পারতাম না, জানতে পারতাম না কোরআন সম্পর্কে, জানতে পারতাম না দীন সম্পর্কে, এমনকি জানতে পারতাম না আমাদের অস্তিত্ব সম্পর্কেও। তাহলে বিষয়টি পরিস্কার যে, নবী (সা.) সমগ্র দুনিয়ার মানুষকে জাহেলী যুগের অন্ধকার থেকে মুক্ত করে গেছেন। আর সেই জাহেলী ভাব যদি এখনো মুসলমানদের মাঝে পরিলক্ষিত হয়, তবে কি আমরা ভেবে নেব যে, কোরআনের আলো যাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি তারা কি আজও অন্ধকারে নিমজ্জিত?

এমনই অসংখ্য অমিল অসংগতিপূর্ণ বিষয় বরাবরই আমাদের অন্তরকে প্রশ্নবিদ্ধ করে চলছে। এসকল প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করার জন্যই আমি বিভিন্ন সময়ে স্বনামধন্য আলেম-ওলামা ও বুজর্গগণের শ্মরণাপন্ন হয়েছিলাম। কিন্তু যথাযথ উত্তর না পাওয়ার কারণেই পবিত্র কোরআন, হাদীস ও ইসলামের ইতিহাসের গবেষণামূলক অধ্যয়নে রত হই। অতঃপর সত্য উন্মোচনে কিছু লেখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। যে প্রশ্নগুলো আমাকে সদা বিব্রত করত, তার কিছু অংশ পাঠকের উদ্দেশে বর্ণনা করছি। যেমন: পবিত্র হাদীস-আল-কিসায় নবীকন্যা ফাতেমা যাহ্রা (সা.আ.) থেকে জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী বর্ণনা করেন। মহান আল্লাহ পাক বলেছেন: “যদি আমি মোহাম্মদকে সৃষ্টি না করতাম তবে এই বিশ্ব ব্রক্ষ্মা- তথা কোনো কিছুই সৃষ্টি করতাম না।”

তাহলে প্রশ্ন থেকে যায়, নবী (সা.) না হলে তো আমরা আল্লাহর পরিচিতি, ইসলাম কিংবা মুসলমান-এর কোনটাই পেতাম না। তাহলে যিনি বা যাঁরা নবী (সা.)-কে লালন-পালন করেছেন, তারা তো ইসলামকেই লালন-পালন করেছেন। যাঁরা নবী (সা.)-কে আশ্রয় দিয়েছেন, তাঁরা তো ইসলামকেই আশ্রয় দিয়েছেন। যারা নবী (সা.)-এর জন্য যুদ্ধ করেছেন, তাঁরা তো ইসলামের জন্যই যুদ্ধ করেছেন। আর যে মহিয়সী নারী নিজের সমস্ত ধন-সম্পদ নবী (সা.)-এর দ্বীন রক্ষায় বিলিয়ে দিয়েছেন, তিনি তো ইসলামকেই সাহায্য করেছেন এবং দ্বীন ইসলামকেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাই মহান প্রভু তাঁদের সেই অবদানের প্রতিদান দিতে ও কার্পণ্য করেননি। পবিত্র কোরআনের সুরা আদ-দ্বোহার ৬ ও ৮ নং আয়াতে ঐসকল মুমিন-মুমিনাতের কর্মের প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তাঁদের কাজকে প্রভু নিজের কর্ম হিসেবে প্রকাশ করেছেন। রব্বুল আলামীন বলছেন :
أَلَمْ يَجِدْكَ يَتِيماً فَآوَىٰ
وَوَجَدَكَ عَآئِلاً فَأَغْنَىٰ
“তিনি কি আপনাকে এতিম রূপে পাননি? অতঃপর আশ্রয় দিয়েছেন। তিনি আপনাকে পেয়েছেন নিঃস্ব রূপে, অতঃপর অভাবমুক্ত করেছেন।”
যদি আমরা উল্লিখিত আয়াতসমূহের গভীরে প্রবেশ করি এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট মিলিয়ে দেখি তবে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হবে নবী (সা.)-কে এতিম অবস্থায় আশ্রয় দিয়েছেন দুই মহান ব্যক্তি। একজন তাঁর দাদা আবদুল মোতালিব, অপরজন চাচা আবু তালিব। আর নিঃস্ব অবস্থায় অভাবমুক্ত করেছেন বিবি খাদীজাতুল কোবরা। এই তিন মুমিন-মুমিনার কর্মকা- এতোটাই প্রশংসনীয় যে, তাঁদের কৃতকর্মকে আল্লাহ পাক নিজ কর্ম বলে স্বীকৃতি প্রদান করছেন।
তাহলে মূল প্রসঙ্গে আসি, আমাদের সমাজের আলেম-ওলামা তাদের ওয়াজ-মাহফিল কিংবা তাদের লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করে থাকেন, “নবী (সা.)-এর চাচা হযরত আবু তালিব নাকি ঈমান আনেননি। নবী (সা.) বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি তিনি চাচাকে ঈমান আনার জন্য কানে কানেও আহ্বান করেছিলেন। কিন্তু চাচা নাকি ঐ অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন।” তাহলে প্রশ্ন থেকেই যায় ইসলামের জন্য যিনি অসংখ্য ত্যাগ-তিতীক্ষা ও অবদান রেখে গেছেন। তার পরেও কেন তাঁর বিরুদ্ধে এই প্রচার প্রচারণা। আর যারা তা করছেন তারাই বা কোন ইসলাম প্রচার করছেন?

তাই সেই মুহসিনে ইসলাম হযরত আবু তালিব, ইসলামের জন্য যে এহসান করেছেন তাঁর কিছু অংশ পাঠকের সামনে তুলে ধরছি। মহান খোদার একত্ববাদের প্রথম ঘোষণার সকল ব্যবস্থা হাশেমি বংশের উজ্জ্বল নক্ষত্র এই আবু তালিবই সর্বপ্রথম ‘দাওয়াত-এ-জুলআসিরা’-র মাধ্যমে সুসম্পন্ন করেছিলেন। সমগ্র আরবের কাফের সর্দারদের উত্তম আপ্যায়নের মাধ্যমে তিনি মোহাম্মদ (সা.)-এর খোদায়ী মিশন ও একত্ববাদের ঘোষণার সকল বন্দোবস্ত করেছিলেন। পরপর দুই দিন কাফের সর্দারেরা ভোজন শেষে চলে যায়। তৃতীয় দিন হয়রত আবু তালিব তরবারি উন্মুক্ত করে বলেছিলেন, “হে সর্দারগণ তোমরা প্রত্যেকেই যার যার অবস্থানে অপেক্ষা করো যতক্ষণ পর্যন্ত আমার ভাতিজা মোহাম্মদ তাঁর বক্তব্য শেষ না করে”। কাফেরেরা সেদিন আবু তালিবের নির্দেশ অমান্য করার সাহস পায়নি।

ইসলামের ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে ঐ দিনই আল্লাহর রাসূল (সা.) প্রকাশ্যে জনসম্মুখে একত্ববাদের ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, “শোনো হে সর্দারগণ! আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয় তাঁর কোনো শরিক নেই। তিনি আমাদের ও তোমাদের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, তিনি ব্যতীত আর কোনো ইলাহ নেই। তাঁকে বাদ দিয়ে তোমরা যেসকল দেব-দেবীর পূজা করছ তা তোমাদের কোনো কল্যাণে আসবে না। কোনো দেব-দেবী আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত নয়। এগুলো তোমাদের বাব-দাদা ও পূর্বপুরুষদের সৃষ্টি। আল্লাহর সমকক্ষ কোনো শক্তিই নেই। তিনি সর্বশক্তিমান। আমি তার দাসদের অন্যতম। আর আজকের দিনে আল্লাহর কাজে যে আমাকে সাহায্য করবে সে হবে আমার ওয়াসী, আমার বন্ধু, আমার সাহায্যকারী ও আমার ভাই।” তখন উপস্থিত লোকজনের মধ্য থেকে হযরত আবু তালিবের কিশোর পুত্র হযরত আলীই নবী (সা.)-এর সাহায্যকারী হওয়ার স্বীকৃতি প্রদান করে দাঁড়িয়েছিলেন। নবী (সা.) তাঁকে বসার জন্য ইঙ্গিত করলেন। নবী (সা.) একই কথা তিনবার উচ্চারণ করে দেখতে চেয়েছিলেন কোরাইশ সর্দারদের মধ্য থেকে কেউ তাঁর সাহায্যকারী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন কি না? কিন্তু না ঐ তিনবারই উঠে দাঁড়িয়েছিলেন হযরত আবু তালিবেরই সন্তান আট বছরের কিশোর আলী। আর ঐ সভাতেই নবী (সা.) তাঁর ওয়াসীর ঘোষণা প্রদান করেন, শুধু দুনিয়াতে নয় আখেরাতের জন্যেও।

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “ইসলামে হযরত আবু তালিবের অবদান [এহসানের প্রতিদানে এহসান ছাড়া আর কী হতে পারে? (৫৫:৬০)]”

Your email address will not be published. Required fields are marked *