লেখক পরিচিত
আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ার বিখ্যাত গবেষক ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ আল্-তিজানী আল্-সামাভি (জন্ম: ১৯৩৬) শুরুতে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের একজন স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তখন তিনি মূলত ‘মালেকী তরিকা’র অনুগত ছিলেন। এরপর তিনি যখন হিজাজে (বর্তমানের সৌদি আরব) সফর করেন, তখন ধীরে ধীরে তাঁর মনে ওহাবী মতবাদের প্রতি আকর্ষণ জন্মাতে থাকে এবং তিনি ওহাবী আক্বিদা’ প্রচারণার কাজ শুরু করেন। ইসলামি গবেষণা ও অনুসন্ধানের প্রতি তাঁর তীব্র আকাঙ্ক্ষার ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন দেশ সফরের সময় কাকতালীয়ভাবে তিনি ইরাক্বের পবিত্র নাজাফ শহর ভ্রমণের সুযোগ পেয়ে যান। ইসলামি ইতিহাসে সমৃদ্ধ পবিত্র নাজাফে গিয়ে তিনি যখন ইসলামের সত্য ইতিহাস ও রহস্য উদঘাটনের জন্য অনুসন্ধান শুরু করেন, তখন বিভিন্ন শিয়া আলেমদের সাথে তাঁর কথা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বিস্তর গবেষণা শেষে তিনি শিয়া মাজহাবকে আলিঙ্গন করে নিয়েছিলেন।
শিয়া মাজহাবে দীক্ষিত হবার পর, তিনি এ মাজহাবের আক্বিদা সম্বন্ধে বেশ-কিছু গ্রন্থ রচনা করেন। সেসব গ্রন্থগুলোর মধ্যে একটি হল [সুম্মা ইহ্তিদাইতু] যাহার ইংরেজী সংস্করণ “Then I Was Guided” -গ্রন্থটিতে তিনি শিয়া মাজহাবে তাঁর আকৃষ্ট হওয়ার কাহিনী বর্ণনা করেছেন এবং একইসাথে বিভিন্ন আলেমদের সাথে তাঁর আলোচনার ঘটনাগুলোও এতে স্থান পেয়েছে। এ আলোচনার মাধ্যমে ইতিহাসের বিভিন্ন অকাট্য সত্য প্রকাশিত হয়ে যাওয়ায় ওহাবী-সালাফীরা বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিল। সেইসাথে তারা লেখক ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ তিজানীর লেখনিকে জাল বলে দাবি করেছিল এবং তাঁকে মুরতাদ’ হিসেবেও আখ্যা দেওয়ার মাধ্যমে মিথ্যাচার আরোপ করা হয়। তাঁর গ্রন্থটি এতই প্রভাব সৃষ্টি করেছিল যে, এটি বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়ে পুরো মুসলিম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় গ্রন্থটি অবশেষে আমি সত্যের সন্ধান পেলাম” শিরোনামে বাংলা ভাষাতেও প্রকাশিত হয়েছে। ড. সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ আল্-তিজানী আল্-সামাভি মনে করেন যে, তিনি শিয়া মাজহাবে দীক্ষিত হওয়ার পেছনে সাইয়্যেদ আব্দুল হুসাইন শারাফউদ্দিন আল্-মূসাভির “আল্-মুরাজিয়াত” ও “আন্-নাস্ ওয়াল ইজতিহাদ” গ্রন্থদ্বয় সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছিল এবং সেইসাথে শিয়া মাজহাবের স্বনামধন্য একজন মার্জা হযরত সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ বাক্বির আস্-সাদরও তাঁর চিন্তাতত্ত্বে যথার্থ ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিলেন।
Reviews
There are no reviews yet.